কবিতা

কবিতা

মুগ্ধতা.কম

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ , ১১:৩৪ অপরাহ্ণ

সেই ফাল্গুনের কথা 

ভাষা আন্দোলনে শাহাদাতবরণকারী ভাইদের স্মরণে 

সেদিন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় এর একঝাঁক মেধাবী তরুণ 

হঠাৎ করেই খালি পায়ে হাঁটা শুরু করে। 

কিছুটা পথ অগ্রসর হয়ে তারা স্থাপন করে 

কাগজ আর বাঁশের অস্থায়ী শহিদ মিনার।

হাতে থাকা ফুল দিয়ে তারা শ্রদ্ধা জানাতে থাকে সেথায়। 

যাদের সংগ্রাম আর আত্মত্যাগের বিনিময়ে আজ এই মহান একুশে ফেব্রুয়ারি।

পুলিশের বাধায় বেশিক্ষণ টেকেনি সেই শহিদ মিনার। 

ঐতিহাসিক আমতলার সেই মধুময় ভাষণ 

হৃদয়ে প্রভাব ফেলে, জায়গা করে নেয়

 ছাত্র-জনতার মনে। 

সেদিন এই ছাত্র জনতা একশত চুয়াল্লিশ  ধারা ভেঙে তছনছ করে দেয়। 

অনেকে সেদিন শাহাদাত বরণ করেছিল

হাজারো ছাত্র-জনতাকে তারা 

এক এক করে জেলখানায় ঢুকাচ্ছিল। 

নাম ডাকতে ডাকতে ডেপুটি জেলার সাহেব বিরক্তির সুরে বলে উঠলো উহ্ এত ছেলের জায়গা দেবো কোথায়?

জেলখানা তো এমনিতেই পরিপূর্ণ। 

ওর কথা শুনে কবি রসুল সেদিন চিৎকার করে বলেছিল- 

জেলখানা আরো বাড়ান সাহেব।

 এত ছোট জেলখানায় কী করে 

এত জনের জায়গা হবে? 

আরেকজন বলে উঠলো, 

সামনে ফাগুনে আমরা দ্বিগুণ হব।

সেই ফাল্গুনের কথা

মুগ্ধতা.কম

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ , ১২:১০ পূর্বাহ্ণ

বসন্ত এবং একুশ

আজ ঘরে ফিরতে মন চায় না, শুধু প্রতিধ্বনি হয় সেই মাথামুহুরীর কুলকুল। নূপুরের রুনুঝুনুতে ভেসে আসা সেই শুকনো পাতার দল। কাঠচোরদের মন খারাপ—স্রোতে ভাসে না আর সেই বাশ ঘাস কাঠের ভেলা। অথচ ভাপা পিঠার হাড়িতে আজও ধোয়া। সেই পিঠাওয়ালা, সেই ভাপার বাটি, সেই ন্যাকড়া,  বসে থাকা বেঞ্চ সব কিছু ঠিকঠাক— শুধু তুমি নেই। ভেতর ভেতর কি যেন ছুটে চলা। তুমি কই?  তুমি কই? ছটপট ছুটে আসা এই সেই কোকিলকূজিত বন। তোমার হাতে লাগানো সেই বাড়ির সেই টব কত ফুলরাশি—যদি থাকতে গুজিয়া দিতাম সেই বাসন্তীর খোঁপায়। তোমরা সকলে ভালো থেকো— বসন্তের সেই শিমুল ফুল কলাগাছের সতরে গাঁথা  সেই টায়ারের ছুটে চলা—সেই নোলক নোলক খেলা।  মনটা ভীষণ খারাপ—সেই দিন নাসিমাদের বাগানে ফুল ছিলো না বলে— কাগজের ফুলে ফুলেল শুভেচ্ছা। সবকিছু ধুয়ে মুছে তুমি ফিরে এসো আমার সেই বাসন্তী। তোমার বুকের তরতাজা সেই ফুল শীতশীত ঘাসে জুতো ছাড়া হেটে যাওয়া একুশের বুকে ফুল দেয়া— আমার সেই বাংলা ভাষা—আমি তোমাকে ভালবাসি। ‘মা মাটি ও দেশ’। ভালো থেকো। সেই আমার বসন্ত—মনের ভেতর এক কুহূ কুহূ ডাকা।

বসন্ত এবং একুশ

শিস খন্দকার

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ , ১২:১০ পূর্বাহ্ণ

ক্ষমা করো হে একুশ

. .. ‘তুমি রোজ যে ভাষায় প্রেম নিবেদন করো আমায়

    এই কর্পোরেট জীবনে প্রযুক্তির ছড়াছড়িতেও

    প্রতি বৃহস্পতিবার পুষ্প পাপড়ি সমেত পত্র লিখ

    লাল কাগজে যে ভাষায়

    সেই ভাষার জন্য একটি কবিতা লিখবে সেই ভাষায়।’

গত বিকেলে এই আবদার করে বসে

এক একুশ বছর বয়সী বাঙালি নারী।

ক্যাম্পাসে হাঁটতে হাঁটতে কণ্ঠে ঝড় তুলে,

—‘যদি না পাই তবে আজীবন আড়ি!’

মন পৃষ্ঠায় নিভৃতে একা কবিতা সাজাই—

আমি ভাবি, স্মৃতিরা ভেবে যায়—

চোখ বুজে আওড়াই পাঠ্যজ্ঞানজাত ইতিহাস—

বায়ান্ন এর বায়ান্নতম দিবসের সেই প্রহর

সালাম-রফিক-বরকত-জব্বার

কবিতার কম্পিত কলামে হাতে-হাতে প্ল্যাকার্ড ধরাই

প্রতি লাইনজুড়ে লাল কালিতে লিখে যাই,

—‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’

রাস্তার পাশে জীর্ণ দেয়ালে হিন্দি সিনেমার পোস্টার।

মুহূর্তের ভাবনা চকিতে থমকে যায়!

কৃতজ্ঞতা—

               একুশ-বায়ান্ন

               সালাম-রফিক-বরকত-জব্বার

               বাঙালি-বাংলা

               স্বর্ণোজ্জ্বল অমর ইতিহাস।

অতঃপর আমি সব—সব ভুলে যাই।

ক্ষমা করো হে একুশ বছর বয়সী নারী

একুশের প্রতি প্রতারণা আমি কীরূপে পারি!

আমার সব কবিতা উচ্ছন্নে যাক

যতদিন না থামবে পরদেশি ভাষার উৎপাত।

ক্ষমা করো হে একুশ

মুগ্ধতা.কম

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ , ১২:১০ পূর্বাহ্ণ

মুগ্ধতা.কম

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ , ১২:০৯ পূর্বাহ্ণ

একাত্তর

দেখিনি আমি ৭১ এর 

শত্রুদের পাশবিক অত্যাচার 

শুনিনি আমি বুকফাটা কান্না

শত শত মানুষের আর্তনাদ আহাজার।

কত না নির্মম পাকহানাদার বাহিনী

কেপে ওঠে মন আমার 

শুনে একাত্তরের কাহিনী।

মায়ের বুক থেকে, বাছারে নিয়ে কেড়ে

মারছে তারে পায়ে পিষ্ট করে।

শোনেনি তারা মায়ের আর্তনাদ

পাছে তারও করেছে সর্বনাশ।

সম্ভ্রম খানি নিয়েছে তারা কেড়ে

বাঁচতে পারেনি সেও, লাঞ্চিত হয়ে বাড়ি ফিরে।

মা হারিয়েছে বুকের মানিক

বোন হারিয়েছে ভাই

আত্মিয় স্বজন হারিয়ে

দুঃখের সীমা নাই।

ভেঙ্গে দিয়েছে, গুড়িয়ে দিয়েছে

জ্বালিয়ে দিয়েছে ঘরবাড়ি

প্রাণে মেরেছে, লুট করেছে

জান-মাল, ইজ্জত টাকা-কড়ি।

দেশ মাতার সোনার ছেলেরা 

শক্ত করে তাঁদের মন, করেছে পণ

স্বাধীনতা আনতে ছিনিয়ে

করবে জীবন দান

তবুও রাখবে তাঁরা, মাত্রিভাষার মান।

বাংলা মায়ের সোনার ছেলেরা যুদ্ধে গেল

মুক্তি সেনার বেশে

স্বাধীনতা আনলে ছিনিয়ে

নয় মাস যুদ্ধের শেষে।

এক আকাশ স্বপ্ন নিয়ে 

মা- আছে পথ চেয়ে

পাবে এবার প্রিয় মুখের দেখা

গগণ ভেদে উড়ছে দেখে,

স্বাধীন বাংলার পতাকা।

স্বাধীনতা অর্জীতে কত ক্ষতি সয়েছে, 

কত জীবন করেছে দান

বুঝেছিল তারা মাত্রীভাষার দাম।

এবার-

স্বাধীনতা রক্ষায় যেন হয় মনজোড় সংগ্রাম।

একাত্তর

হাই হাফিজ

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ , ১২:০৯ পূর্বাহ্ণ

হৃদয়ে বাংলা ভাষা

নদীর বয়ে চলা ভাঙ্গাগড়া পথে
চেয়ে থেকে থেকে বেলা পড়ে আসে,
জানা হয় না কোথায় গন্তব্য তার,
কিংবা সারাবেলা গোপন মিতালী কার সাথে।
কানে কানে বলে দেয় নদী —
আমার মনের যত ভাব, যত কথা
আজস্ম যাই বলে যাই
বাংলায় নিরবধি।

পাখির কাকলি আর সুমধুর সুরে,
ভুলে যাই সব ব্যথা গ্লানি অবসাদ,
কী যে মোহ! কতো সুধা! জানা হয়নি আজো।
প্রশ্নবিদ্ধ হই বার বার, শুধু ভাবি!
গানে গানে বলে বলে দেয় পাখি —
আমার কন্ঠের এ গান সে তো সুর নয়,
যেন বাংলা ভাষায় ডাকাডাকি।

বৃষ্টির ঝরঝর ধারা ঝরে অবিরাম,
ছন্দের তালে তালে একটানা সুর বাজে,
ফোঁটা ফোঁটা শব্দের গভীরতা সীমাহীন,
কী কথা লুকিয়ে আছে তাতে?
যায় না বোঝা কোনমতে।
বৃষ্টি জানায় গর্বভরে–
আমি তো বাংলা ভাষা-ই শুধু জানি,
এ ভাষাতে পথ চলি, যাই গান করে।

পাহাড় সাগর করে ভাব বিনিময়,
মেঘ ডাকে, বায়ু বয়ে যায় বাধাহীন,
রাতেরা কথার পসরা সাজায় থরে থরে,
নিশি জাগে চাঁদ, রাত শেষে ভোর হাসে,
ফুলে ফুলে সোনালী সূর্য ডানা মেলে!
নিসর্গ মেতে ওঠে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে।
বাংলা ভাষার স্নিগ্ধতা
নীলাকাশে,
রাজপথে,
ঘাসে ঘাসে।

হৃদয়ে বাংলা ভাষা

আবু হানিফ জাকারিয়া

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ , ১২:০৯ পূর্বাহ্ণ

ভাষার আর্তনাদ 

ভাষা শহিদেরা ওপার থেকে করছে আর্তনাদ।

হাহুতাশ করে জীবিত ভাষা সৈনিক যারা

জীবন দিয়ে আর লড়াই করে আনল যে ভাষা।

সে ভাষার আজ কি যে করুণ দশা।

লৌকিক ভাষাপ্রেমী সুশীলদের নেই অপবাদ।

গুমরে কাঁদে আজ বেদনার্ত আত্মা 

বেহাল মাতৃভাষা করে আর্তনাদ 

লোকদেখানো ভাষাপ্রেম দেখে।

বর্ণমালা খঁচিত  শাড়ি -পাঞ্জাবি,

একুশের প্রথম প্রহরে শহিদ মিনারে ফুল দেয়া,

নাঙা পায়ে প্রভাতফেরি, দিনব্যাপী ভাষার গান,

দেশের গান, সবকিছুই কি মনের টানে?

নাকি সব লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা?

মাতৃভাষার নেই সম্মান, শুধুই অবমাননা।

ইংরেজি ভাষায় দারুণ দখল, 

হিন্দি গানেও  দক্ষতা সমান,

পোশাক আশাকে সাহেবি ঢং

তারো আবার হাজারো রঙ।

সাদাকালোতে বাঙালি সাজার কি আপ্রাণ চেষ্টা।

একদিনের বাঙালি সেজে একি নয় প্রতারণা?

ভাষার আর্তনাদ

মুগ্ধতা.কম

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ , ১১:৫৭ অপরাহ্ণ

মধুময় মাতৃভাষা

মুগ্ধতা.কম

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ , ১১:৫৭ অপরাহ্ণ

একুশ তুমি

একুশ তুমি প্রতিটি বাঙালির অহংকার

তোমার তরে তাজা তাজা প্রাণ অকাতরে

ঝরে ফেললেও,  আদায় করে নিয়েছ,

বাংলা মায়ের আদরমাখা মাতৃভাষার।

বাংলার একুশ আজ নয় শুধু আমার, আপনার

শত বঞ্চনা, গঞ্জনার আহাজারির নিপাত ঘটিয়ে

দেশে-বিদেশে শত কোটি বাঙালির আত্মায়,

শিকড় গজিয়েছ ভালবাসায় বাংলা ভাষার।

মাগো, পাকিস্তানি পিশাচেরা কেড়ে নিতে চেয়েছিল

তোমার আচঁলমাখা মুখের ভাষা, প্রানের ভাষা

ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখে দামাল ছেলেদের

অগ্নিঝরা রক্তিম সূর্যের ত্যাজ, তাদের উচিৎ শিক্ষা দিলো।

রক্তের অগ্নিশিখায় অন্তর পুড়ে পুড়ে

বাংলা মায়ের নব উত্থানে জাগ্রত সন্তানেরা

মাতৃভাষাকে  বুকের মধ্যে আগলে রেখে,

রক্তে রাঙা হাত নিয়ে উজ্জীবিত করেছে

একুশের বাংলাকে, মাথা উঁচু দাঁড় করিয়েছে

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে, বিশ্ব মায়ের দরবারে।

একুশ তুমি

মুগ্ধতা.কম

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ , ১১:৫৭ অপরাহ্ণ

বাংলা বর্ণমালা ও বায়ান্নের একুশ

বায়ান্নের একুশ বাংলা ভাষার বর্ণের রূপকার,

ভাষা শহিদের রক্তে জন্য,পেলাম বর্ণমালা উপহার।

একুশ মোদের মায়ের ভাষা জ্ঞানের দীপ্ত বাতি

বাংলা  ভাষায় কথা বলে আজ বাঙালি জাতি।

একুশ মোদের ফাগুন মাসের নানান রঙের ফুল-

সালাম রফিক বরকত জব্বারের রক্ত মাখা চুল।

একুশ শুধু নয় বাঙালির, বিশ্ব মাতৃভাষার চেতনা-

মাতৃভাষার স্বীকৃত দিবস, বিশ্ববাসীর প্রণোদনা।

স্বরবর্ণ ব্যঞ্জনবর্ণের পঞ্চাশ বর্ণের বাংলা বর্ণমালা-

ভিনদেশি মায়ের ভাষা, যায় না মন খুলে সব বলা।

বর্ণবর্ণে যোগসূত্রে বাংলা মায়ের ভাষা-

ছিলাম যেন মূর্খ বাঙালি দিনমজুর আর চাষা।

অ-আ-ক-খ, যত বাংলা স্বর-ব্যঞ্জনবর্ণ-

শহিদ মিনার স্মৃতিস্তম্ভ ভাষা শহিদের জন্য।

মূর্খ-মজুর যত পণ্ডিত  ভাষার জন্য যাদের অবদান-

তাই এই বাংলার সবখানে এখন বাংলা মায়ের জয় গান।

সাত সকালে প্রভাতফেরি, যায় মিলে সব দলে দলে-

শহিদ মিনার ভরপুর হয় যায়, ফাল্গুনের ফুলে ফুলে।

একুশ মোদের ভাষার বিজয় স্বাধীনতার সূত্রপাত-

বায়ান্ন, একাত্তরে ঐ পাকিরা হয়েছে  কুপকাত।

বাংলার বর্ণমালা মাতৃবর্ণ স্বীকৃত রাষ্টভাষা-

বায়ান্নের একুশ বিশ্বমাতৃভাষা দিবস-

মোরা এখন শিক্ষিত চাষা!

বাংলা বর্ণমালা ও বায়ান্নের একুশ