শিরোনাম

শিরোনাম

মুগ্ধতা.কম

২৮ জুন, ২০২০ , ৭:১৯ অপরাহ্ণ

দুঃস্থদের পাশে দাঁড়ালো ‘পাশে আছি’

দুঃস্থদের পাশে দাঁড়ালো 'পাশে আছি'

‘হাত পেতে চাওয়া কিংবা ভিক্ষা নয় স্বাবলম্বী হতে চেষ্টা করি’- এই শ্লোগানকে সামনে রেখে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকালে দুঃস্থদের সহায়তায় এগিয়ে এলো স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন ‘পাশে আছি।’

সংগঠনের উদ্যোগে ২৮ জুন রবিবার সকালে রংপুর নগরীর পার্বতীপুর এলাকায় কয়েকজন দুঃস্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয় ব্যবসায় সামগ্রী। এসব সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ব্যাটারি চালিত ভ্যান, সেলাই মেশিন এবং নগদ টাকা।

সকালে এলাকার ঈদগাহ মাঠে এসব সামগ্রী বিতরণ কালে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা ড. মুস্তাফিজুর রহমান, কবি হেলেন আরা সিডনী, লেখক ও চিকিৎসক ফেরদৌস রহমান পলাশ, লেখক ও সংগঠক জাকির আহমদ, রিফাত হোসেন রিহান প্রমুখ।

সময় নগরীর পার্বতীপুর পশ্চিম পাড়া এলাকার নাজমুল হোসেন রনিকে একটি ব্যাটারি চালিত ভ্যান, শতরঞ্জি পাড়ার শিউলি বেগমকে সেলাই মেশিন এবং গনেশপুরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মর্জিনা বেগমের হাতে নগদ ১০ হাজার টাকার চেক তুলে দেয়া হয়।

সংগঠনের অন্যতম উদ্যোক্তা হেলেন আরা সিডনী বলেন, বরাবরই বিভিন্ন দুর্যোগে আমরা দুঃস্থদের পাশে দাঁড়াবার চেষ্টা করি। এবার করোনাকালে অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারও বিভিন্ন কাজে যোগ দিতে বাধ্য হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে অনেকের ব্যবসা। এর মধ্যেই আমরা খবর পাই, নগরীর এইসব মানুষদের খুবই সাহায্যের প্রয়োজন। যদিও আমাদের সহায়তা প্রাপ্ত ব্যক্তির সংখ্যা কম, কিন্তু আমরা চেষ্টা করেছি এ তিনজনকেই এবারের মতো স্বাবলম্বী হবার পথ করে দেবার।

ভবিষ্যতে এরকম সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে জানান ড. মোস্তাফিজার রহমান ও লেখক ফেরদৌস রহমান পলাশ।

সংগঠক জাকির আহমেদ সমস্ত ভালো উদ্যোগে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

 

দুঃস্থদের পাশে দাঁড়ালো 'পাশে আছি'

ডা.ফেরদৌস রহমান পলাশ

৩০ মার্চ, ২০২০ , ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ

ডায়াবেটিস রোগীর জন্য করণীয়

দেখা যাচ্ছে যে, করোনার আক্রমণে যেসব রোগী হার মানছেন তাদের ৮ থেকে ৯ শতাংশ ডায়াবেটিক রোগী। এর মূল কারণ হলো, ডায়াবেটিক রোগীর সবচেয়ে বড় সমস্যা তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি কম। ফলে করোনা তাদেরকে সহজে কাবু করতে পারে। একই সমস্যায় এসব রোগীর প্রেসার, কিডনি ইত্যাদিতে প্রভাব পড়ে থাকে। কাজেই অন্য অনেক সাবধানতার মধ্যে ডায়াবেটিক রোগীর দিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে।

১. কোন অবস্থাতেই তাদের সুগার লেভেল যেন বেশি না হয় সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। ওষুধ বা ইনসুলিন অ্যাডজাস্ট করতে হবে।

২. সকাল সন্ধ্যা বাইরের হাঁটা এখন বন্ধ হলেও ঘরেই ব্যায়াম করতে হবে।

৩. দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি হাত ধোয়া, হাঁচি-কাশি শিষ্টাচার ঠিক রাখতে হবে।

৪. ঘরেই সুগার মাপার জন্য গ্লুকোমিটার রাখতে হবে। প্রতিদিন মেপে দেখতে হবে।

৫. হাঁচি কাশি তা সে যে কারণেই হোক (আগের অ্যালার্জিজনিত হলেও) সেটা যেন কোনভাবেই অন্যের সামনে দেয়া না হয়।

৬. হাঁচি-কাশি রোধে সব ধরণের ঠাণ্ডা খাবার পরিহার করতে হবে।

৭. বয়স্ক ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বেশি সাবধান থাকতে হবে।

৮. বাড়িতে কোন জ্বরকাশির রোগী থাকলে তাকে প্রথমেই ডায়াবেটিস ও বয়স্ক লোকদের কাছ থেকে আলাদা করে রাখতে হবে।

৯. এসব রোগী কোন অবস্থাতেই যেন বাইরে না যান সেদিকে কড়া নজর রাখতে হবে।

১০. কোন ধরণের হরমোনজনিত সমস্যা থাকলে সেদিকে নজর দিতে হবে।

১১. কিডনির/ হাইপারটেনশনের সমস্যা থাকলে আগের পরামর্শ ঠিকমতো মেনে চলতে হবে।

মোট কথা কোন অবস্থাতেই ডায়াবেটিক রোগীর সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে দেয়া যাবে না।

 

ডা. মনোজ গোয়েল, বিভাগীয় প্রধান, পালমোনলোজি, ফরটিস মেমোরিয়াল রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ভারত-এর ভিডিও সহায়তা।

 

করোনা-ভাইরাস:-ডায়াবেটিস-রোগীর-জন্য-করণীয়

মুগ্ধতা.কম

২১ মার্চ, ২০২০ , ৪:০৮ অপরাহ্ণ

করোনা : আমাদের সংকট ও সরকারের করণীয়

করোনা ভাইরাস ইতোমধ্যে বিশ্বের ১৮৬ টি দেশে আঘাত হেনেছে। এ পর্যন্ত বিশ্বে রোগীর সংখ্যা ২ লাখ ৮৪ হাজার ৭১২ জন।

চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছে ৯৩ হাজার ৫৭৬ জন রোগী। এ রোগে মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার ৮৪২ জন।

২১ মার্চ সন্ধ্যা ৬ টা ৩৪ মিনিটে ওয়ার্ল্ড ও মিটার ওয়েব সাইট থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। করোনায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে শতকরা মৃতের হার মাত্র ৪ ভাগ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী শতকরা ৮০ ভাগ রোগী কোন বিশেষ চিকিৎসা ছাড়াই সুস্থ হয়েছেন।

এছাড়া করোনায় আক্রান্ত শতকরা ১৭ ভাগ রোগী গুরুতর অসুস্থ হয়। যাদের অধিকাংশই আরও অন্যান্য রোগ দ্বারা আক্রান্ত এবং বয়ঃবৃদ্ধ। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। তবে এ ভাইরাস থেকে শিশু এবং যুবকরাও নিরাপদ নয়।

করোনার বৈশিষ্ট্য :

১. মানুষ / কোন প্রাণীর দেহ ছাড়া করোনা ভাইরাস বাহিরে বেঁচে থাকতে পারে না।

২. হাঁচি-কাশির সাথে দেহ থেকে বেরিয়ে করোনা ভাইরাস কোন না কোন সারফেসের (টেবিল, চেয়ার, ফাইল ইত্যাদি) উপরে লেগে থাকে। এ অবস্থায় কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েক দিন এই ভাইরাস বেঁচে থাকে।

৩. মানুষের দেহে এটি নিজে নিজে প্রবেশ করে না।

ক. অসুস্থ ব্যক্তির হাঁচি-কাশির সময় এক মিটার থেকে দুই মিটারের মধ্যে কোন সুস্থ ব্যক্তি হাঁচি-কাশির ড্রপলেট ইনহেল (শ্বাসগ্রহণ) করলে ।

খ. মানুষ হাত দিয়ে এটি ক্যাচ করে (ধরে নেয়)- কোন না কোন সারফেসের উপর থেকে। তারপর মনের অজান্তে হাতের মাধ্যমে চোখ, মুখ এবং নাক স্পর্শ করে সংক্রমিত হয়। ( সুতরাং নো কন্টাক্ট, নো করোনা ) বলা হয়, Without Hand wash, don’t touch your mouth, nose and eyes. This is the only procedure to prevent it.

আমাদের সংকট :

১. ইন্টারন্যাশনাল ট্রান্সমিশন আমরা বন্ধ করতে পারিনি। এটাই বাস্তবতা।

২. লোকাল ট্রান্সমিশন বন্ধ করে ম্যানডেন্টরি কোয়ারেন্টাইন করতে পারিনি। অনেকে পালিয়ে গেছে। এটাই বাস্তবতা।

৩. কমিউনিটিতে পালিয়ে যাওয়া কিংবা অজ্ঞতার জন্য ঘোরাঘুরি করা লোকজন কমিউনিটি ট্রান্সমিশনে ব্যবহৃত গণপরিবহন, অটোরিক্সা, রিক্সা, ট্রেন, স্টিমার, লঞ্চ প্রভৃতির আসন সংক্রমিত করেনি বলে আমাদের কাছে সঠিক তথ্য নেই।

৪. বিপদ হচ্ছে কমিউনিটি ট্রান্সমিশনে জিওম্যাট্রিক হারেরও বেশি গুণে এটি দেশকে আক্রান্ত করতে পারে।

৫. কোথাও কোথাও লক ডাউন করে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

৬. বর্তমান বাস্তবতা হাসপাতালগুলোতে স্বাস্থ্যকর্মী, নার্স ও চিকিৎসকবৃন্দ সাধারণ সর্দি, কাশি ও জ্বরের সাথে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত রোগী পৃথক করে চিকিৎসা দিতে আতঙ্কিত হচ্ছেন এবং চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা কষ্টকর হচ্ছে।

৭. বিভিন্ন হাসপাতালে নার্স, ইন্টার্ন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকগণ ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য গাউন, ক্যাপ,মাস্ক কিংবা পিপিই’র স্বল্পতার কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কিংবা কাজে মনোনিবেশ করতে পারছেন না।

৮. কোন কোন ক্ষেত্রে নিজ নিরাপত্তার স্বার্থে চিকিৎসক ও নার্সগণ নিজে নিজে গাউন, ক্যাপ, মাস্ক বানিয়ে ব্যবহার করছেন।

৯. গণমাধ্যমে প্রচারিত বারবার অবধারিত মৃত্যুর ঘন্টা ধ্বনি জাতিকে মানসিকভাবে পঙ্গু করে ফেলেছে।

সরকারের করণীয় :

১. গণমাধ্যমে সুস্থ হয়ে যাওয়া রোগীর পজেটিভ সংবাদ প্রচার করতে হবে।

২. নার্স, ইন্টার্ণ চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মী ও চিকিৎসকগণের (ফ্রন্ট ফাইটারস্) নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দ্রুত গতিতে সরবরাহ করতে হবে।

৩. প্রতিটি হাসপাতালে আলাদা সর্দি, কাশি, জ্বর সংক্রান্ত রেসপিরেটরী রোগীদের জন্য আলাদা কর্নার করতে হবে। সেখানে চিকিৎসকদের পর্যাপ্ত সরঞ্জাম সরবরাহ করতে হবে।

৪. বস্তুত করোনা, নন করোনা প্রমাণের জন্য শুধু মাত্র টেস্ট, টেস্ট এবং টেস্ট ছাড়া আপাতত কোন পদ্ধতি নেই। যা এই স্বল্প সময়ে দেশে টেস্ট কিট সংগ্রহ প্রায় অসম্ভব। সরকারকে টেস্ট কিটের ব্যবস্থা করতে হবে।

৫. আইসোলেটেড হাসপাতাল, বিশেষায়িত আইসিইউ প্রতিটি বিভাগীয় শহরে স্থাপন এখন সময়ের দাবি।

৬. পিপিই পরিধান, মাস্ক পরিধান, অন্যান্য সরঞ্জামের ব্যবহার ও করোনা রোগী ম্যানেজমেন্টে ট্রেনিং শিডিউল দ্রুত গতিতে অনলাইন ভিত্তিক চালু করতে হবে।

৭. প্রশিক্ষিত নার্স, চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মীদের নিরাপত্তাসহ তাদের মানসিক সাহস জাতিকে করোনা যুদ্ধে বিজয়ী হতে সাহায্য করবে।

দেশপ্রেমিক ধনীক শ্রেণির করণীয় :

১. জীবনুনাশক স্প্রে, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান, স্প্রে মেশিনসহ বিভিন্ন সংক্রমিত স্থান জীবানুমুক্ত করতে বিভিন্ন সংগঠন, যুব সমাজ, ছাত্র সমাজ, ক্লাবকে কাজে লাগিয়ে তহবিল সরবরাহ করে এ যুদ্ধে নামতে পারেন।

২. বিভিন্ন পোষাক শিল্পে কর্মীদেরকে কাজে লাগিয়ে প্রচুর পরিমাণে ক্যাপ, মাস্ক, গাউন তৈরি করে প্রযোজ্য জায়গায় সরবরাহ করতে পারেন।

৩. অচিরেই দেশে নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্য সংকট ও আয় সংকট দেখা দিবে। তা মোকাবেলার জন্য কল্যান তহবিল জরুরী।

সার্বিক প্রতিরোধ : মাত্র তিনটি বার্তা

১. হাত না ধুয়ে চোখ, নাক এবং মুখ স্পর্শ করা যাবে না। সুস্থ-অসুস্থ সবার ক্ষেত্রে এটি অবশ্যই পালনীয়।

২. রেসপেরিটরী হাইজিন অর্থ্যাৎ অসুস্থ ব্যক্তি যেখানে-সেখানে সর্দি-কাশি, হাঁচি, দেবেন না। নিজের কনুই কিংবা টিস্যুতে / গামছায় / ওড়নায় / শাড়ির আঁচল প্রভৃতি দিয়ে ভাইরাস ছড়ানো ঠেকাতে হবে।

৩. বাড়িতে ফেরার পর পরিধানের কাপড়-চোপড় সবকিছু সাবান জলে এক ঘন্টা ডুবিয়ে রেখে পরিস্কার করুন।

 

ডা. জামাল উদ্দিন মিন্টু

রেজিস্ট্রার, মেডিসিন, রমেক হাসপাতাল।

আইসিইউতে কর্মরত।

করোনা : আমাদের সংকট ও সরকারের করণীয়

সিরাজুম মনিরা

২১ মার্চ, ২০২০ , ৯:১২ পূর্বাহ্ণ

করোনা আতংক: মানসিক চাপ কমাবেন যেভাবে

বর্তমান পৃথিবীর জন্য একটি বড় ধরণের সংকট হলো পৃথিবীব্যাপি মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। এই সংকট শুধুমাত্র যে একটি রোগ তা নয় বরং এর প্রভাব রয়েছে সমাজ ও অর্থনীতিতে।

এমনকি যে বিষয়টি এখনও কেউ তেমন আলোচনা করছেন না তা হলো আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যেও বড় ধরণের চাপ তৈরি করছে এই ভাইরাস। এ ধরণের যে কোন সংকটে মানসিক চাপ ও কষ্ট অনুভব করা, ভীত হওয়া, আতংকিত হওয়া, বিভ্রান্ত হওয়া, রাগান্বিত হওয়া ইত্যাদি আবেগীয় ঘটনা একজন মানুষের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া।

তবে এসব আবেগীয় প্রতিক্রিয়া কোন ব্যক্তি অতিমাত্রায় অনুভব করলে এর নেতিবাচক প্রভাব তার দৈনন্দিন কাজকর্ম ও আচরণের উপর পড়তে থাকে। এর ফলে ব্যক্তি সংকট/সমস্যা মোকাবেলার প্রতি মনোযোগী না হয়ে আরও অতিরিক্ত দুঃশ্চিন্তা করতে থাকে যা তার মানসিক চাপের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে জীবনমান কমিয়ে দেয়।

বর্তমান পরিস্থিতিতে কিছু ছোট খাটো পদক্ষেপ এই সংকট মোকাবেলায় আমাদের সাহায্য করতে পারে। পাশাপাশি মানসিক চাপ কমাতেহও সাহায্য করবে। মানসিক চাপ কমাতে যা করতে হবে:

১. স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা অনুসরণ করা যেমন: যথাসম্ভব বাসায় অবস্থান করা, সঠিক সময়ে সুষম খাদ্য গ্রহণ করা, পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম, কাছের মানুষজনের সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্য, ইমেইল এর মাধ্যমে যোগাযোগ রাখা। পাশাপাশি পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অবলম্বন করা।

২. সতর্কতা মূলক কাজকর্মের (যেমন পরিষ্কার পরিছন্নতা) প্রতি উদাসীনতা না দেখিয়ে বরং মেনে চলা বাঞ্ছনীয়। এক্ষেত্রে নেতিবাচক মনোভাব দেখালে তা শুধু নিজের জন্য ঝুঁকি বয়ে আনবে তা নয় আমাদের পরিবার ও সমাজকেও ঝুঁকিতে ফেলে দিবে। তাই আপনি সঠিকভাবে মেনে না চললে আপনার পরিবারের লোকজন আপনাকে সতর্কতা মূলক কাজগুলো করার জন্য চাপ দিলে আবেগিয় প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে কেন বলছে সে বিষয়ে ভাবা এবং মেনে নেয়া।

৩. আবেগ নিয়ন্ত্রণের জন্য ধুমপান বা কোন মাদকদ্রব্য গ্রহণ না করা।

৪. অতিমাত্রায় মানসিক চাপ, দুঃশ্চিন্তা অনুভব করলে লুকিয়ে না রেখে এ ব্যাপারে কথা বলা। আলোচনা করা এবং প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করা।

৫. ভুল তথ্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং সত্য ও বিজ্ঞান নির্ভর তথ্য সংগ্রহ করা। তথ্য সংগ্রহের জন্য নির্ভরযোগ্য সূত্র (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে খুঁজুন)থেকে নিতে হবে এবং সতর্কতা গ্রহণ করতে হবে।

৬. মানসিক অস্থিরতা কমানোর জন্য করোনা ভাইরাস সম্পর্কে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সম্প্রচারিত সংবাদসমূহ অতিমাত্রায় পড়া, দেখা বা শোনার মাত্রা কমিয়ে দেয়া।

৭. অতীতেও আপনি হয়তো আপনার জীবনে ঘটে যাওয়া নানা সংকট দৃঢ়তার সাথে মোকাবেলা করেছেন। সেই অতীত অভিজ্ঞতাগুলো থেকে আপনার দক্ষতাগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। এই দক্ষতাগুলোই বর্তমান সংকটে আপনার আবেগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।

শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য করণীয়:

এখন আমরা আলোচনা করবো উদ্ভূত এই পরিস্থিতিতে শিশুদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় কিছু বিষয় নিয়ে।কারণ শিশুরা এ সকল সংকট ও চাপে ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়, যেমন: উদ্বিগ্নতা, রাগান্বিত হওয়া, উত্তেজিত হওয়া, সবকিছু থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়া, ঘ্যানঘ্যান করা বা কাছের মানুষের সাথে আঠার মতো লেগে থাকা ইত্যাদি।

এক্ষেত্রে আমাদের করণীয় হলো-

১. শিশুদের আবেগীয় পরিবর্তনের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া এবং তাদের সমস্যা সম্পর্কে শোনার চেষ্টা করা। তাদের প্রতি মনোযোগ দেয়া এবং আদর করা।

২. শিশুদের সাথে কথা বলা এবং তাদের আশ্বস্ত করা।

৩. শিশুদের সাথে কথা বলা এবং তাদের আশ্বাস্ত করা।

৪. শিশুদেরকে তাদের পিতামাতা ও পরিবারের সাথে রাখা। যদি কোন কারণে আলাদা করতে হয় তবে সে ব্যাপারে খুলে বলা এবং নিয়মিত যোগাযোগ করা।

৫. একটি নির্দিষ্ট রুটিন অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর উপায়ে চলতে উদ্বুদ্ধ করা।

৬. শিশুর বয়স অনুযায়ী তাকে সঠিক তথ্য প্রদান করা এবং আশ্বস্ত করা।

সর্বোপরি সবার উদ্দেশ্যে একটি বার্তা-অপ্রয়োজনে ভুল তথ্য নিয়ে আতংকিত না হয়ে শান্ত থাকার চেষ্টা করুন।

নিজে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি অন্যকে সচেতন করুন।

সবাই মিলে শারিরীক ও মানসিকভাবে ভালো থাকুন।

তথ্যসূত্রঃ বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার ওয়েবসাইট

 

সিরাজুম মনিরা

ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, রিজিওনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টার

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রংপুর।

চেম্বার: রিদম ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টার (ধাপ আট তলা মসজিদের পশ্চিমে)

সিরিয়াল: ০১৭৭৭৩৩৭০৮৯

করোনা আতংক: মানসিক চাপ কমানে যেভাবে

ডা. শাফায়াত হোসেন লিমন

১১ মার্চ, ২০২০ , ৫:৫৯ অপরাহ্ণ

করোনা ভাইরাস: যা জানতেই হবে

আমাদের দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে এটা প্রায় সকলেই জেনে গেছেন। এখন প্রশ্ন হলো এটা নিয়ে আমাদের কতটুকু চিন্তিত হওয়া উচিত এবং প্রতিরোধ করার জন্য কী ব্যবস্থা নেয়া দরকার এবং আমাদের লাইফস্টাইলটা কেমন হলে আমরা করোনা ভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম হব ইন শা আল্লাহ্ঃ

১. আমাদের প্রথম কাজ হলো এটা নিয়ে গুজব না ছড়ানো, অতিরিক্ত আতংকিত না হওয়া। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর মধ্যে মৃত্যুর হার মাত্র ১-২%। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অন্যান্য অনেক রোগ আছে যেসবের মৃত্যুর হার করোনার চেয়ে বেশি। সুতরাং উল্টোপাল্টা গুজব না ছড়িয়ে ধৈর্য ধরে ব্যবস্থা নিতে হবে।

২. করোনা ভাইরাস আকৃতিতে বড়। এটা সাধারণত বাতাসে ভাসে না৷ তাই বাতাসের মাধ্যমে ছড়ানোর সম্ভাবনা কম৷ এটা মূলত ছড়ায় Droplet তথা হাঁচি, কাশি, সর্দির মাধ্যমে। এ কারণে আমাদের যতটা না মাস্ক ব্যবহার করা দরকার তার চেয়ে বেশি দরকার হাত ধোয়া। মাস্ক ব্যবহার করতে গিয়ে আবার হিতে বিপরীত হতে পারে৷ কারণ বেশিরভাগ মানুষই মাস্ক সঠিকভাবে ব্যবহার করতে জানে না। আমাদের উচিত বারবার হাত ধোয়া, খাবার আগে, টয়লেটের পরে, সন্দেহজনক কিছু ধরার পরে। মোট কথা যত বেশি পারা যায় হাত ধোয়া।

৩. বেশি বেশি ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খাওয়া যেমনঃ আমলকি, লেবু, কাঁচা মরিচ ইত্যাদি। চায়নাতে করোনা ভাইরাসের চিকিৎসা করার জন্য শিরাপথে ভিটামিন সি ব্যবহার করে বেশ ভালো রেজাল্ট পাওয়া গেছে।
রেফারেন্সঃ
https://clinicaltrials.gov/ct2/show/NCT04264533

ভিটামিন সি শরীরে প্রদাহ কমায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, এতে প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে৷ তাই বেশি করে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খান।

৪. ফাস্টিং তথা না খেয়ে থাকা। আমরা অনেকেই জানি ফাস্টিং আমাদের ইমিউনিটি তথা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আমাদের উচিত বেশি বেশি ফাস্টিং করা এতে করোনা ভাইরাস আমাদের আক্রমণ করার সুযোগ পাবে না ইন শা আল্লাহ্।

৫. যাদের অন্য রোগ আছে যেমনঃ ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যা, শ্বাসকষ্ট, এজমা ইত্যাদি এবং যারা বয়স্ক তাদের অধিক সতর্ক থাকতে হবে। করোনা সাধারণত এনাদেরই বেশি আক্রমণ করে৷ কারণ তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই যারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত, খুব সতর্ক থাকবেন।

আরো পড়ুনঃ করোনা ভাইরাস: রক্ষা কবচ নিজের কাছে

৬. রোগ দেয়ার মালিক আল্লাহ্, সুস্থ করার মালিকও তিনিই৷ তাই আমাদের সবচেয়ে জরুরী যে কাজ তা হলো আল্লাহর কাছে দুয়া করা৷ তিনি যেন এই মহামারী থেকে আমাদের রক্ষা করেন।

করোনা ভাইরাসের লক্ষণগুলো সাধারণ ফ্লু গুলার মতই। জ্বর, সর্দি, কাশি ইত্যাদি। এই লক্ষণগুলো যদি দেখা দেয় তাহলে প্রথমে ধৈর্য ধরে সাধারণ ব্যবস্থাগুলো নিতে হবে। ৭-১০ দিন পরেও যদি ভাল না হয় এবং যদি শ্বাসকষ্ট সহ রোগের অবনতি হয় তবে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে পরীক্ষা করার জন্য IEDCR এ যোগাযোগ করতে হবে। রোগীগণ নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

মাস্ক ব্যবহার প্রসঙ্গে

করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে আসার পর হুট করে মাস্কের দাম বেড়ে গেছে। ১৫০ টাকায় যে বক্স বিক্রি হত তা এখন ১৫০০-২০০০ টাকা! কিন্তু করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে আসলেই কি মাস্ক পরার প্রয়োজন আছে?

করোনা ভাইরাস একটি বড় আকৃতির ভাইরাস। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে এটি বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় না। এটা ছড়ায় respiratory droplets অর্থাৎ হাঁচি, কাশি, সর্দি ইত্যাদির মাধ্যমে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কারো এই ড্রপলেটগুলোর সাথে আপনারা যদি সরাসরি কন্টাক্টে আসেন তথা স্পর্শ করেন তখন আপনার শরীরে এই ভাইরাস ঢুকতে পারে।

World Health Organisation (WHO) এর গাইডলাইন অনুযায়ী কোনো সুস্থ মানুষের করোনা ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য কোনো মাস্ক ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। তাহলে মাস্ক কারা ব্যবহার করবে? যারা অসুস্থ হয়েছেন তারা। যাদের সর্দি, কাশি, হাঁচি হচ্ছে তারা মাস্ক পরে থাকবেন যেন এগুলো বাইরে না ছড়ায়৷ হাঁচি বা কাশি দেয়ার সময় টিস্যু ব্যবহার করা উচিত৷

কিন্তু টিস্যু যদি না থাকে তখন কী করবেন? আপনার হাতের কনুই ব্যবহার করবেন। হাত ভাঁজ করে কনুইটা মুখের কাছে এনে তারপর হাঁচি বা কাশি দিবেন। হাতের মধ্যে দিবেন না কিন্তু!

সুতরাং করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য মাস্ক পরার প্রয়োজন নেই৷ বরং পরিষ্কার পানি দিয়ে বারবার হাত ধুয়ে নিন ও প্রচুর ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খান।

এছাড়া আরও কিছু নরমাল এটিকেট মেনে চলা দরকারঃ

১. কারো জ্বর, সর্দি, কাশি হলে সেটা সাধারণ ফ্লু ই হোক না কেন সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বাসা থেকে বের হবেন না।
২. কোনো ব্যক্তির যদি হাঁচি, কাশি থাকে তার থেকে তিন ফিট বা ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখুন।
৩. যত বেশি পারা যায় হাত ধুয়ে নিন। প্রতিবার নামাজ পড়ার আগে ওযু করার চেষ্টা করুন।
৪. কোনো রকম গুজবে কান দিবেন না। কোনো জড় পদার্থের উপর করোনা ভাইরাস বেঁচে থাকতে পারে না৷ তাই চীন বা করোনা আক্রান্ত বিভিন্ন দেশ থেকে আনা কোনো জিনিস ব্যবহার করাতে কোনো সমস্যা নেই। রসুন খাওয়া শরীরের জন্য ভালো। তবে রসুন, করোনা প্রতিরোধে তেমন কিছু করতে পারে না।

নিজে জানুন, অন্যকে জানান। ভয় পাবেন না, ভরসা রাখুন আল্লাহর উপর।

আল্লাহ্ তা’আলা আমাদের করোনার আক্রমণ থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দিন।

 

প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন আইইইডিসিআর এর সাথে

IEEDCR

 

ডা. শাফায়াত হোসেন লিমন

চিকিৎসক, লাইফ স্টাইল মডিফায়ার।

ফেসবুক পেজ: fb.com/dr.shafayat.hossen.limon

করোনা ভাইরাস: যা জানতেই হবে

সিরাজুম মনিরা

৯ মার্চ, ২০২০ , ৭:৫০ অপরাহ্ণ

পজেটিভ প্যারেন্টিংঃ সন্তান লালন-পালনের ইতিবাচক কৌশল

পর্ব-১

বর্তমান সময়ের সকল পিতা মাতার (Parent) একটি সাধারণ জিজ্ঞাসা হলো কীভাবে সন্তান লালন-পালন করবো? কী করলে সন্তানটি একজন ভালো মানুষ হয়ে গড়ে উঠবে? এ ধরণের নানান প্রশ্ন বর্তমান সময়ের সব পিতা-মাতার মনে ঘুরপাক খায়।

সমস্যা হলো আমরা যে সময়ে এবং সমাজ ব্যবস্থায় বড় হয়েছি এবং যেভাবে আমাদের পিতা মাতা আমাদের লালন পালন করেছে সেই সময়ের থেকে বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। এছাড়া সন্তান লালন পালনের মত একটি জটিল বিষয় সম্পর্কে আমাদের কোন পড়াশোনা নেই বললেই চলে। আমরা মূলত শিখছি কীভাবে আমাদের লালন পালন করা হয়েছে, অন্যের পরামর্শ গ্রহণের মাধ্যমে। এর মাধ্যমে আমরা আমাদের মত করে একটি উপায় বের করছি। এই উপায় কখনও সফল হচ্ছে কখনও আবার ব্যর্থ হচ্ছে।

এখন যদি আমরা জানতে চাই কীভাবে ইতিবাচক উপায়ে আমার সন্তানকে পালন করবো? তবে তার আগে জানতে হবে আমি কোন ধরণের প্যারেন্ট বা পিতামাতা।

সাধারণত ৪ ধরণের প্যারেন্ট বা পিতামাতা রয়েছে।

১। কর্তৃত্ববাদী/ কঠোর পিতামাতা (Authoritration)

২। যত্নশীল পিতামাতা (Authoritative)

৩। অনুমতিমূলক পিতামাতা (Permissive)

৪। উদাসীন পিতামাতা (Neglectful)

এই চার ধরণের পিতা মাতার বৈশিষ্ট্য এবং এর প্রভাব সম্পর্কে অন্য একটি লেখায় লিখবো।

আজ মূলত কিছু টিপ্স দেব সন্তান লালন পালনের ইতিবাচক কৌশল বিষয়ে।

১. আপনার সন্তানকে জানার ও বোঝার চেষ্টা করুন। তার চাহিদাগুলো কী কী তা জানার চেষ্টা করুন।

২. তার সাথে খোলামেলা কথা বলা চেষ্টা করুন। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

৩. সন্তানের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন।

৪. একজন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে সন্তানের জন্য কিছু নিয়মনীতি ঠিক করে দিন।

৫. সন্তানের সাথে গুণগত সময় কাটান। তার সাথে খেলাধুলা করুন, ঘুরতে যান, গল্প করুন।

৬. মনে রাখতে হবে সন্তানকে ভালো আচরণ শেখাতে চাইলে আগে নিজেকে ভালো আচরণ প্রদর্শন করতে হবে।তাকে ভালো আচরণে উদ্বুদ্ধ করুন, মনোযোগ দিন, প্রশংসা করুন এবং পুরস্কার দিন।

৭. কোন কারণে সন্তান খারাপ আচরণ করলে সেদিকে বেশি মনোযোগ না দিয়ে শান্তভাবে বোঝান। কখনোই যেন সে খারাপ আচরণে পুরস্কার না পায়।

৮. বর্তমান সময়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সন্তানের জন্য মোবাইল ফোন চালানো, টেলিভিশন দেখা, ল্যাপটপ চালানোর সময় নির্ধারণ করুন।

মোট কথা, আপনার সন্তানকে ভালোবাসুন, উৎসাহ দিন, প্রশংসা করুন এবং সন্তানের সামনে তার রোল মডেল হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলুন।

 

সিরাজুম মনিরা,

ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, রিজিওনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টার

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রংপুর।

চেম্বার: রিদম ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টার (ধাপ আট তলা মসজিদের পশ্চিমে)

সিরিয়াল: ০১৭৭৭৩৩৭০৮৯

monosamajik pramorsho

ডা.ফেরদৌস রহমান পলাশ

৯ মার্চ, ২০২০ , ৫:৫৫ অপরাহ্ণ

করোনা ভাইরাস: রক্ষা কবচ নিজের কাছে

বর্তমানে যে রোগ নিয়ে বিশ্ব আলোড়িত তা হলো করোনা ভাইরাস, এখন যাকে বলা হচ্ছে COVID-19. চীন থেকে উৎপত্তি হয়ে এ রোগ ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপি।

বিশ্বের ১০৩ টি দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে এখন পর্যন্ত তিন হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ৭০ জনই মারা গেছে চীনে। অন্য ১০ টি দেশে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৪২১ জন।

ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১ লাখেরও বেশি মানুষ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনা ভাইরাস সম্পর্কে উচ্চ মাত্রার সতর্কতাও জারি করেছে। দেশে দেশে হাসপাতাল, হোটেল, বিমানবন্দর এমনকি পুরো প্রদেশকে কোয়ারেন্টাইন করা হচ্ছে। অচল হয়ে পড়ছে দেশগুলো।

মিডিয়ায় বিষয়টি থাকছে লিড আইটেমর। ফলে মানুষজন দরকারের চেয়ে বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে। এরই মধ্যে আমাদের দেশে তিনজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রুগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি গড়ে অন্য আড়াইজন লোককে সংক্রামিত করতে পারে।

গত বছর শেষের দিকে চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে এ ভাইরাসটি ছড়িয়েছে বলে ধারণা করা হয়। চীন এ রোগ সীমাবদ্ধ রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে সাংহাই, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, মালয়েশিয়া, নেপাল, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ইরান, ইতালি এবং কানাডায়। বন্য পশুপাখি আর সামুদ্রিক মাছের মাধ্যমেও এ রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।

লক্ষ্মণগুলো কী কী?

১.জ্বর ১০০ ডিগ্রি বা তার বেশি

২. কাশি

৩. সর্দি

৪. গলাব্যাথা

৫. মাংসপেশী বা গাঁটের ব্যথা

৬. মাথা ব্যথা

৭. যেসব দেশে এ রোগ দেখা দিয়েছে সেখান থেকে ১৪ দিনের মধ্যে আসার তথ্য।

৮. বয়স্ক ব্যক্তিরা এবং যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ অন্য দীর্ঘমেয়াদি রোগ আছে তাদের আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশী।

COVID-19

কীভাবে ছড়ায়?

কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস যার শরীরে আছে অর্থাৎ রোগে আক্রান্ত তার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে সুস্থ মানুষের শরীরে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি হাঁচি-কাশি দিলে সেই জীবাণু সুস্থ মানুষের শরীরে প্রবেশ করে।

মৃত্যুঝুঁকি কতখানি?

শিশুদের যাদের বয়স ১০ থেকে ৩৯ বছর তাদের কম মাত্র ০.২%, মধ্যবয়সে ৪০ থেকে ৪৯ বছর মাত্র ০.৪%। ৮০ বছর বা তার বেশী হলে মৃত্যঝুঁকি ১৪.৮%।

সব জ্বরই করোনা নয়

জ্বর কোন রোগ নয়। রোগের লক্ষ্মণ। সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বর হলে সর্দিকাশি থাকবে কিন্ত করোনাভাইরাস জ্বরে সর্দি হয় না। জ্বর ১০৩ /১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট হতে পারে সাথে কাশি। শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থাগুলোর একটি হলো এই জ্বর। সাধারণত মানব শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট। এরচেয়ে বেশী তাপমাত্রাকে জ্বর বলে। যেহেতু জ্বর শরীরের রোগ প্রতিরোধের একটা অংশ তাই জ্বর আসলেই আতংকিত হবেন না।

যা করণীয়

১. ভালোভাবে ঘনঘন সাবান পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে।

২. করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে নাকে, মুখে আঙ্গুল বা হাত দেয়ার অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে। কারণ, মানব শরীরে জীবাণু ঢোকার সদর দরজা হলো নাক-মুখ-চোখ। ৩. জনসমাগমস্থল এড়িয়ে চলতে হবে।

৪. হাঁচি-কাশির সময় টিসু পেপার বা রুমাল ব্যবহার করতে হবে।

৫. মাস্ক পরা জরুরী তবে আমরা যে পাতলা মাস্ক ব্যবহার করছি এটা দিয়ে হবে না। লাগবে বিশেষ ধরণের মাস্ক। যার কোড N95

৬. হাত মেলানো(হ্যান্ডশেক), কোলাকুলি থেকে বিরত থাকতে হবে।

৭.হাত না ধুয়ে চোখ, মুখ ও নাক স্পর্শ করা যাবে না।

চিকিৎসা কী?

ভাইরাসজনিত রোগ বলেই এর তেমন কোন চিকিৎসা নেই। জ্বর, সর্দি কাশি হলে আপনার নিকটস্থ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আতংকিত না হয়ে চিকিৎসা সেবা নিন ভালো থাকুন।

ভয় নাই, ওরে ভয় নাই

করোনাকে যতটা আত্মঘাতী বলে প্রচার করা হচ্ছে বাস্তবে তা কিন্ত নয়। এরচেয়ে প্রাণঘাতি ছিল ইবোলা ভাইরাস, নিপা ভাইরাস, মার্স ভাইরাস। আমরা কিন্তু সেসব ভাইরাসকে মোকাবেলা করেছি, অতএব অযথা আতংকিত হবেন না।

এ প্রসঙ্গে বলে রাখি, এখন পর্যন্ত আক্রান্তদের প্রায় ৬২ শতাংশ মানুষ চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে চলে গিয়েছে। বাকি আক্রান্ত লোকেরাও চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরার অপেক্ষায়। কথা পরিস্কার, শিশুরা এই রোগ থেকে অনেকটাই ঝুঁকিমুক্ত এবং যারা মারা গেছে তাদের প্রায় সবারই অন্য রোগের ইতিহাস ছিলো অথবা তারা বয়স্ক মানুষ। সুতরাং অযথা আতঙ্কিত না হয়ে বা গুজব না ছড়িয়ে সতর্ক হোন।

প্রয়োজনে সাহায্য নিন:

নিজের অথবা পরিবারের কারো করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ দেখা দিলে বাংলাদেশ সরকারের ‘ইনস্টিটিউট অব এপিডেমোলোজি ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ’ বা আইইডিসিআরের হটলাইনে যোগাযোগ করুন।

IEEDCR

এছাড়াও প্রতিটি হাসপাতালে আলাদা আইসোলেটেড ওয়ার্ড প্রস্তুত আছে। সাধারণ জ্বর সর্দি হলে সুস্থ তো হবেনই, এমনকি করোনায়ও যদি আক্রান্ত হয়ে যান তবুও ভয়ের কিছু নেই। সাধারণ চিকিৎসা ও পর্যবেক্ষণ শেষে বাড়ি যেতে পারবেন।

 

ডা. ফেরদৌস রহমান পলাশ

সহযোগী অধ্যাপক, প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রংপুর।

চেম্বার: প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রংপুর। সিরিয়াল: 01723672651

বদরগঞ্জ চেম্বার: হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বদরগঞ্জ, রংপুর।

 

corona virus

মুগ্ধতা.কম

৮ মার্চ, ২০২০ , ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত, জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ

বাংলাদেশে তিনজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ গবেষণা ইন্সটিটিউট আইইডিসিআর।

এদের মধ্যে দুইজন সম্প্রতি ইতালি থেকে এসেছেন।

রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানিয়েছেন, ”তিনজনের শরীরে নভেল করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে”

আক্রান্তদের বয়স বিশ থেকে পয়ত্রিশ বছরের মধ্যে বলে জানানো হয়েছে।

করোনাভাইরাস: কীভাবে শনাক্ত করছে বাংলাদেশ?

করোনাভাইরাস গাইড: আপনার প্রশ্নের উত্তর

করোনাভাইরাসে হওয়া রোগের নতুন নামকোভিড১৯

করোনাভাইরাসের উৎপত্তি কোথায়, কেন এতো প্রাণঘাতী

কিভাবে শনাক্ত

আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেছেন, এই তিনজনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে শনিবার।

“আক্রান্তদের মধ্যে যে দুইজন ব্যক্তি দেশের বাইরে থেকে এসেছেন, দেশে আসার পর তাদের যখন লক্ষ্মণ ও উপসর্গ দেখা গেছে, তখন তারা আইইডিসিআরের হটলাইনে যোগাযোগ করেছেন। তার ভিত্তিতে সংস্থাটি থেকে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার পর করোনাভাইরাস ধরা পড়ে।”

ইতালি থেকে আসা দুই ব্যক্তি ভিন্ন পরিবারের সদস্য।

তবে তাদের নমুনা সংগ্রহের সময় দুই পরিবারের আরো চারজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

“চারজনের মধ্যে একজনের পরিবারের একজন নারী সদস্যের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। বাকি তিনজন নেগেটিভ।”

আক্রান্তরা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, কিন্তু কোথায় সে বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

আক্রান্ত ব্যক্তিরা বাদে আরো তিনজনকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।

উদ্বিগ্ন হবার কিছু নেই‘ – শেখ হাসিনা

আজই প্রথমবারের মত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাস নিয়ে কথা বলেছেন।

ঢাকায় নারী দিবসের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, “করোনাভাইরাস মোকাবেলায় যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে, উদ্বিগ্ন হবার কিছু নেই।”

একই আহ্বান জানিয়েছেন আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরাও।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সার্বিক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, “এর আগে সরকার প্রতিটি হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিট করা হয়েছিল, এখন আইসোলেটেড হাসপাতাল চিহ্নিত করা হচ্ছে। এগুলো ঢাকার বাইরেও চিহ্নিত করা হচ্ছে।”

“পরবর্তীতে যদি রোগী আরো বৃদ্ধি পায়, যদি স্কুল কলেজ বা কমিউনিটি সেন্টারে হাসপাতাল করার প্রয়োজন হয়, তাহলে সে প্রস্তুতিও সরকারের আছে।”

সদা পরিবর্তনশীল করোনাভাইরাস কতটা বিপজ্জনক?

নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের?

এর বাইরে বেসরকারি হাসপাতালেও আইসোলেশন ইউনিট করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

জনসমাগম এড়িয়ে চলুন

সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত তিনজন আক্রান্ত হয়েছে।

এতে করে সারা বাংলাদেশে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে এমন কিছু বলা যাবে না। স্কুল-কলেজ বন্ধ করার প্রয়োজন নেই।

তবে সাধারণ মানুষকে জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

এজন্য বাড়িতে থাকা পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

করণীয় হিসেবে সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়া ও কাশি শিষ্টাচার মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

এজন্য গণমাধ্যমসহ দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

আইইডিসিআর এর এই পরিচালক বলেন, সবাইকে মাস্ক পরে ঘুরতে হবে বিষয়টা এমন না।

“আক্রান্ত রোগী ও রোগীকে যিনি সেবা দিবেন তারা মাস্ক পরবেন। সবার পড়ার প্রয়োজন নাই।”

তথ্যসূত্র: বিবিসি

coronavirus

সিরাজুম মনিরা

৫ মার্চ, ২০২০ , ১২:২৭ অপরাহ্ণ

মানসিক স্বাস্থ্য-সচেতনতার শুরুর কথা

স্বাস্থ্য বলতে এক কথায় আমাদের মনে প্রথমেই শারীরিক সুস্থতা বা অসুস্থতার কথাই ভেসে ওঠে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা স্বাস্থ্যের সংজ্ঞায় কেবল রোগ বা দূর্বলতার বিষয়কে গুরুত্ব দেয় নি বরং শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সুস্থতার একটি সুষ্ঠু অবস্থার কথা নির্দেশ করা হয়েছে।

কিন্তু আমাদের কাছে মানসিক অবস্থা বা মানসিক স্বাস্থ্য একটি উপেক্ষিত বিষয়। এমনকি আমরা এ সম্পর্কে মোটেও সচেতন নই। এই অবহেলা বা অসচেতনতা থেকে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে তৈরি হয়েছে নানা ভ্রান্ত ও নেতিবাচক ধারণা।

কেউ মানসিক সমস্যার কথা ভুল করে বলে ফেললে আমরা তাকে ‘পাগল’ বলে আখ্যায়িত করি বা কখনও এমনও বলে থাকি যে, সেই ব্যক্তি নাটক/অভিনয় করছে। তাকে নানাভাবে হেয় করে থাকি। আমরা ভুলেই যাই যে, মানসিক মানসিক স্বাস্থ্যও স্বাস্থ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।তবে আশার কথা হলো, দিন দিন মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে আমাদের সচেতনতা বাড়ছে এবং আমরা এই বিষয়ে বলতে চাই।

এখন যদি আমরা বুঝতে চাই আসলে মানসিক স্বাস্থ্য বলতে কী বুঝায়? মানসিক স্বাস্থ্য বলতে আমরা এমন একটি অবস্থাকে বুঝি যেখানে একজন ব্যক্তি নিজস্ব দক্ষতার বিকাশ ঘটিয়ে দৈনন্দিন জীবনের চাপসমূহ যথাযথভাবে মোকাবেলা করার পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনে ও সমাজে ফলপ্রসূ অবদান রাখতে সক্ষম হয়।

শারীরিক সমস্যাসমূহ সহজেই আমাদের চোখে পরে কিন্তু মানসিক সমস্যা সম্পর্কে সম্যক ধারণা না থাকায় আমরা এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করি না। এর ফলে সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তির কর্মদক্ষতা কমে যেতে থাকে। এমনকি পাশাপাশি নানা ধরণের শারীরিক লক্ষণও দেখা যায়। আমরা সাধারণ দৃষ্টিতে মানসিক সমস্যার প্রকোপ সম্পর্কে অতটা আন্দাজ করতে পারি না। ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দের একটি জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে শতকরা ১৬ জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি এবং শতকরা ১৮ জন শিশু কোন না কোন মানসিক সমস্যায় ভুগছে।

এছাড়া আরেকটি জরিপে দেখা গেছে, সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে শতকরা ৯০ জন তাদের মানসিক সমস্যার কথা প্রকাশ করতে চায় না এবং চিকিৎসা করাতে চায় না।

এ অবস্থায় আমরা যদি সুখি সমৃদ্ধ দেশ ও জাতি গঠণ করতে চাই তবে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে অবহেলা করে কখনোই তা করতে পারব না। এমনকি আমাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও সম্ভব নয়।

তাই আসুন, মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হই, এ বিষয়ে কথা বলি।

সিরাজুম মনিরা  ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, রিজিওনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টার, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রংপুর

 

monosamajik pramorsho