1st January, 2025

শিল্প ও সাহিত্য

ছায়ামানব

রাত্রি গভীর। চারদিকে নীরবতা। গ্রামের প্রান্তে পুরনো একটা বাড়ি—চাঁদের আলোয় তার ছাদ ঝিলমিল করছে। বাড়িটিতে থাকে রাফি, একজন দশ বছরের ছেলে, ও তার ঠাকুরদা।

রাফির এক অদ্ভুত অভ্যাস ছিল—সে রাতে ঘুমোতে পারত না। তার মনে হতো, জানালার পাশে একটা ছায়ামানব দাঁড়িয়ে থাকে, চুপচাপ তাকিয়ে থাকে তার দিকে। রাফি ভয় পেত, কাঁথা মুড়ি দিয়ে লুকিয়ে থাকত।

একদিন সে তার ঠাকুরদাকে বলল, “ঠাকুরদা, জানালায় কেউ আসে। ছায়ার মতো। আমি খুব ভয় পাই।”

ঠাকুরদা একটু হেসে বললেন, “ভয় পেলে ভয় আরও বড় হয়। সামনে তাকাও, তবেই বোঝা যাবে সেটা আসলে কী।”

সেই রাতে ঠাকুরদা ঘুমোতে গেলেন না। রাফিকে সাহস দিয়ে জানালার পাশে বসিয়ে রাখলেন। ঘড়ির কাঁটা বারোটা ছুঁতেই ছায়াটা আবার দেখা দিল।

ঠাকুরদা বললেন, “চলো, আজ আমরা ছায়ামানবকে অভ্যর্থনা জানাই।”

দু’জনে মিলে জানালা খুলে বাইরে তাকাল—দেখে এক বুড়ো আমগাছের ডাল বাতাসে দুলছে, আর আলো-আঁধারিতে ছায়াটা যেন নড়ে উঠছে।

রাফি এক দৌড়ে বাইরে গেল, হাতে একটা টর্চ। আলো ফেলতেই দেখা গেল—কোনো মানুষ নয়, গাছের ছায়া আর দোল খাওয়া শাখা। ভয় কোথায় যেন মিলিয়ে গেল।

সেই রাতেই রাফি প্রথম ভয়কে বন্ধু বানিয়ে নিল।

মূল বার্তা: ভয় জিনিসটা অজানা আর কল্পনার খেলা। সাহস করে যখন আমরা তার মুখোমুখি হই, তখন বুঝতে পারি—ভয়ের চেহারা খুব সাধারণ। শুধু একটুখানি আলোই দরকার।

Novel